প্রফেশনাল লাইফ শুরু করার পর প্রথম যে চিন্তাটি মাথায় আসে তা হচ্ছে কোনটা করবো? ফ্রিল্যান্সিং নাকি চাকরী? আপনি গ্রাফিক ডিজাইনার হোন কিংবা থ্রিডি আর্টিস্টই হোন না কেন সব সময়ই এই ব্যাপারটা নিয়ে দ্বিধা কাজ করে। ফ্রিল্যান্সিং করবো নাকি স্টুডিও জব করবো? আসলে দুইটারই পক্ষ এবং বিপক্ষ অনেক দিক রয়েছে। সেরা সিদ্ধান্ত নিবেন আপনার জন্য যে দিকগুলো বেশি প্রাধান্য পায় সেটা বিবেচনা করে। আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নিতে আপনার জন্য সহজ হবে।
এখানে চাকরী বলতে বুঝানো হয়েছে যারা এক অফিসে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ফিক্সড স্যালারির জব করে আর ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বুঝানো হয়েছে যারা বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেসে কাজ করে এবং বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাজ করে।
বর্তমান আধুনিক কর্মক্ষেত্রগুলোতে যদিও “কাজ ও জীবনের সমন্বয়” করে কাজ করা হয় তবে তারপরেও আমাদের দেশে সব জায়গায় এখনো সেভাবে এই প্রচলন গড়ে উঠেনি।
আমাদের দেশে অনেক কর্মজীবী মানুষই আছেন যারা ৯টা-৫টার বাইরেও প্রচুর সময় অফিসে ব্যয় করে থাকে। এমনকি অফিস টাইমের বাইরেও ইমেইল চেক করা, ফোনে অফিসের বিভিন্ন কাজের রেসপন্স করা সহ অনেক কাজই করতে হয়।
তবে এর বাইরে কর্মী বিভিন্ন সরকারি ছুটি, সিক লিভ, বিয়ের ছুটি পাওয়া সহ বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন ভাতা, সুযোগ সুবিধাও পেয়ে থাকেন চাকরীজীবীরা।
ফ্রিল্যান্সিং করার অন্যতম প্রধান সুবিধা হচ্ছে নিজের ইচ্ছা মত সময়ে কাজ করা যায়। ৯-৫ টার অফিসের মত কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। শুধু তাই নয়, অনেকেই আছেন পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। তখন ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আদর্শ কারণ নিজ ঘরে বসেই সকল কাজ!
এছাড়াও যারা ঘুরাঘুরি পছন্দ করেন তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং সোনায় সোহাগা। কারণ সাথে ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট নিয়ে যেখানেই যান না কেন সেখানেই কাজ করতে পারেন। কক্স বাজার সমুদ্র সৈকতের পাশে বসে কাজ করার অভিজ্ঞতা হতে পারে।
তবে ফ্রিল্যান্সারদের কাজের বাইরেও কাজ থাকে! অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেও খুব বেশি সফল হন না। কারণ ফ্রিল্যান্সিং এ ভাল করতে হলে আপনি শুধু ভাল কাজ জানলেই হবে না; সাথে সাথে আপনাকে কমিউনিকেশন স্কিলড হতে হবে, বিড করতে হবে, কাজ খুজতে হবে এবং সব শেষে ডেডলাইনের ভিতর একাই পুরো প্রজেক্ট করে জমা দিতে হবে। পাশা পাশি ক্লায়েন্ট ম্যানেজ করা, নিজের টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান নিজেই করা ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং করা অনেকটা ছোট ব্যবসায় পরিচালনা করার মতই। আর আপনি যদি কোর আর্টিস্ট হয়ে থাকেন তাহলে স্টুডিওতে শুধু কাজ করে গেলেই হবে, অন্য যা সব ম্যানেজম্যান্ট করবে। অর্থাৎ নন-আর্টিস্ট অনেক কাজ ফ্রিল্যান্সিং এ করতে হয়।
আপনার যদি নিয়ম কানুন অনুযায়ী কাজ করা এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করা ভাল লাগে তাহলে ফুলটাইম স্যালারি চাকরী ভাল হবে। আর যদি আপনার নিজের সময়ে কাজ করতে পছন্দ করেন হোক সেটা দিনে কিংবা রাতে এবং কাজের বাইরেও যদি আপনার অন্য কোথাও সময় দেয়া প্রয়োজন হয় তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে সেরা পছন্দ।
অফিস পলিটিকস খুবই ক্রুশিয়াল একটি অংশ, যে কারণে কর্মক্ষেত্রে সাধারণ কাজও বেশ জটিলভাবে করতে হয়, আশে পাশের মানুষের অনেক বিষয় ম্যানেজ করে কাজ করতে হয় যা কাজের সময়ের বিশাল একটি পার্ট নিয়ে নেয়। অনেকে এই স্ট্রেস নিতে পারে না এবং অন্য কোথাও চলে যাওয়ার পরিকল্পনায় থাকে সব সময়।
এটা অনেকটা ব্রেক এবং এক্সিলেটর দু পায়ে চেপে গাড়ি চালানোর মতো। একদিকে অফিস পলিটিক্স ব্রেক কষে চলতে হয় আবার অন্যদিকে এক্সিলেটর ব্যবহার করে সামনেও যেতে হয়।
অবশ্যই সব কর্মক্ষেত্র এমন বিসাক্ত নয় তবে বড় কোম্পানীগুলোতে এই ধরণের শক্তি পরীক্ষা দিয়েই টিকে থাকতে হয়।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনাকে অফিস পলিটিক্স নিয়ে চিন্তা করার তেমন দরকার নেই। কারণ আপনি কোন নির্দিষ্ট একটি কোম্পানীর আন্ডারে কাজ করছেন না, অনেকগুলো কোম্পানীর বসের সাথে কাজ করছেন এমনকি আপনার যদি নিয়মিত ক্লায়েন্টস থাকে তাও আপনি অফিস পলিটিক্স থেকে দূরে আছেন।
আপনি যেহেতু রিমোটলি কাজ করছেন, অ্যাসাইনম্যান্ট শেষ করে ইনভয়েস সেন্ড করে দিচ্ছেন সেহেতু পলিটিক্সের কোন সুযোগই নেই। আর যদি পলিটিক্সের স্বীকার হয়েই যান তাহলে সেই ক্লায়েন্টকে বাদ দিয়ে নতুন ক্লায়েন্ট অনায়াসেই পেয়ে যাবেন। তবে পুরোপুরি পলিটিক্স বাদ দিতে পারবেন না হয়ত, কারণ অনেক সময় ক্লায়েন্ট একই কাজে বার বার কারেকশন দেয় যা অনেকটাই ফ্রিতেই করতে হয়।
এছাড়া ফ্রিল্যান্সাররা প্রায় ১০০% ই সৎ হয়। এই লাইনে অসৎ হওয়ার তেমন কোন সুযোগই নেই।
যদি আপনি মানুষকে বুঝতে পারেন, তাদের ইমোশনকে ধরতে পারেন, কমপ্লেক্স পরিবেশে কাজে অভ্যস্থ থাকেন এবং অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে পারেন তাহলে অফিস পলিটিক্স করেও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারেন। আর যদি এত কিছু হ্যান্ডেল করতে না চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিংই হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ।
ফিক্সড স্যালারির চাকরীজীবীদের এটাই হলো সবচেয়ে বড় সুবিধা এবং পার্থক্য। কারণ চাকরীজীবীরা অনেক ধরণের ভাতা পেয়ে থাকে যেমন, ঈদ বোনাস, যাতায়াত সুবিধা, স্যালারি লোন, নববর্ষ ভাতা, মাতৃকালীন ছুটি এবং চাকরীজীবন শেষে অবসর প্রাপ্ত ভাতা সহ অনেক কিছু। এটা শুধু আপনারই সুবিধা নয় সাথে সাথে আপনার পরিবারকেও নিরাপদ করে তুলে।
এছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানীভেদে আলাদা সুবিধা দেয় যেমন, ফ্রি জিম মেম্বারশীপ, কোম্পানী ক্যাফেটেরিয়া এবং বিভিন্ন প্রডাক্টে ছাড়! কোম্পানী অনেক সময় ট্রেইনিং এর ব্যবস্থাও করে থাকে ফলে নিজের স্কিল উন্নয়ন অনেক কোম্পানী নিজ খরচেই করে দেয়।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সব কিছু আপনাকেই করতে হবে। যাবতীয় খরচ এবং অবসরের পর কিভাবে জীবনযাপন করবেন সেটার দায়িত্বও আপনার এমনকি কোন ট্রেইনিং করা লাগলে সেটাও নিজ দায়িত্বেই করতে হবে। তবে অনেক সময় ক্লায়েন্ট খুশী হয়ে বোনাস দেয়, অনলাইন টিউটোরিয়াল কোর্স কিনে দেয় ইত্যাদি।
এখানে পরিস্কারভাবেই বলে দেয়া যায় কে বিজয়ী। তবে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি যদি এই বিষয়গুলো মাথায় নিয়েও পরিকল্পিতভাবে কাজ করা যায় তাহলে অনেকটাই ওভারকাম করা সম্ভব।
কোম্পানীতে সব সময়ই আপনার একজন বস থাকবে যে আপনাকে কি করতে হবে সেটা বলে দিবে। কোম্পানী নিয়মকানুনগুলোও আপনাকে অনুসরণ করতে হবে হোক সেটা লিখিত কিংবা অলিখিত এবং অনেকটাই আপনার জন্য অতিরিক্ত প্রেসার মনে হতে পারে। তাই এই হিসেবে বলাই যায় আপনার কাজে ফ্রিল্যান্সারের তুলনায় খুব কমই নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
তবে অনেক সময় আপনার বস যদি ভাল হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে অনেকটাই স্বাধীনতা দিবে এবং ভাল বসের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখাও যায়। আর আপনার র্যাংক যত বাড়বে তত বেশি স্বাধীনতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আপনার কাছেই থাকবে। আর আপনি যদি মাল্টিমিডিয়া কাজে এক্সপার্ট হোন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে অন্যতম পছন্দ। কারণ আপনি একই সাথে হয়তো গ্রাফিক ডিজাইন, মোশন গ্রাফিক্স, ভিডিও এডিটিং করে পরিপূর্ণ প্যাকেজ কাজ করতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং এ আপনি এই স্বাধীনতাটুকু পাবেন। আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজে বিড করবেন আর বিভিন্ন প্রজেক্ট করবেন যা ফিক্সড জবে যা সাধারনত করতে পারবেন না।
নিজের মাল্টি স্কিল প্রদর্শনের জন্য কিংবা ভারি পোর্টফোলিও তৈরি করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে সেরা পছন্দ।
তবে প্রত্যেক প্রজেক্টেই আপনার একজন বস থাকবে যিনি আপনাকে বিভিন্ন গাইডলাইন দিবে এবং সেভাবে কাজ করতে হবে। আর যদি ক্লায়েন্টের চাহিদা মত কাজের ধারে কাছেও না থাকতে পারেন তাহলে সমস্যায় পড়তেই হবে!
অনেক সময় ভয়ংকর ক্লায়েন্টের ক্ষপ্পরে পরতে হয় ফ্রিল্যান্সারদের। পেমেন্ট নিয়ে হেলা ফেলা করা, কাজের কারেকশন প্রতিনিয়ত বাড়ানো, অনেক সময় ক্লায়েন্ট কি চায় নিজেই বুঝতে পারে না এমনকি অনেক সময় ক্লায়েন্টই কাজে নতুন!
তবে অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে ক্লায়েন্টদের সাথে ম্যানেজ করার স্কিলও বাড়ে। ফলে ভয়ংকর ক্লায়েন্টকে সহজেই চেনা যায় এবং অনেক সময় ম্যানেজ করাও সহজ হয়ে যায়। ক্লায়েন্ট যদি জিতবো-হারবো মনমানসিকতার হয় সেক্ষেত্রে কোন চুক্তিতে না যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
অভিজ্ঞ অনেক ফ্রিল্যান্সাররা এশিয়ান ক্লায়েন্টদের কাজ না করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে ক্লায়েন্টের প্রোফাইল যদি ভারী সেক্ষেত্রে এশিয়ান হলেও করা যায়।
আর ক্লায়েন্ট যদি খুতখুতে হয় সেক্ষেত্রে বড় একটি সুবিধা হচ্ছে আপনার কাজের কোয়ালিটি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার দৃষ্টি আরো ধারালো হবে।
কথিত আছে কোম্পানীর জন্য কাজ করার চেয়ে নিজের কাজ করলে সেই কাজে নিয়ন্ত্রণ থাকে বেশি। এটা কিছুটা সত্য বিশেষ করে ক্রিয়েটভ সেক্টরে তবে বর্তমানে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হচ্ছে।
আপনি যখন কোন কোম্পানিতে চাকরী করবেন তখন মটিভিটেড হবেন অনেকভাবেই এবং নিয়ম অনুযায়ী। আপনার পারফর্ম্যান্স পুরো বছর জুড়ে যা থাকবে সেটা বিবেচনা করে পরের বছর আপনার স্যালারি বাড়বে নাকি বোনাস পাবেন নাকি প্রোমশন পাবেন সেটা নির্ভর করবে। অর্থাৎ আপনার প্রোমশনের জন্য আপনি সব সময়ই তাগিদ অনুভব করবেন।
অনেক সময় আপনি অফিসে লেট করতে পারেন তখন বস হয়তো রাগ করবে আর সেই জন্য পরেরবার থেকে লেট যেন না হয় সেটা সব সময়ই খেয়াল রাখবেন। এই ধরণের তাগিদ অনেকের জন্যই দরকার হয়ে থাকে।
যেহেতু আপনি ফ্রিল্যান্সার তাই যে কোন ধরণের মটিভেশন, তাগিদ তা পুরোপুরি নিজেকেই ম্যানেজ করতে হবে। ক্লায়েন্ট আপনাকেই খুজে বের করতে হবে, মার্কেটিং করতে হবে, আপনার পোর্টফোলিও সাইট ডিজাইন করতে হবে এবং কাজের ব্যাপারে নেগোশিয়েশনও করতে হবে। সব কিছু আপনাকেই করতে হবে কেউ কোন প্রেসার দিবে না, এমনকি কেউ বলবেও না এখন কাজ করো।
ক্লায়েন্টের কাজ যদি ৩০ দিনের মধ্যে করতে হয় তাহলে প্রতিদিন একটু একটু করে আপনাকেই করে যেতে হবে। এখন সেই ২৯ দিন আপনি টিভি দেখবেন নাকি ঘুমাবেন নাকি আড্ডা দিবেন তা কেউই বলে দিবে না। কিন্তু ৩০ দিনের মাথায় আপনাকে সেই প্রজেক্ট ঠিকই ক্লায়েন্টের কাছে জমা দিতে হবে। তবে আপনি যদি রুটিন মেনে সব করতে পারেন তাহলে কোন সমস্যাই নেই।
আপনি যদি নিজেকে সেভাবে তাগিদ দিতে না পারেন তাহলে ফিক্সড স্যালারির চাকরী আপনার জন্য বেস্ট হবে। আর যদি নিজের কাজ নিজেই গুছিয়ে করতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আদর্শ। তবে দিন শেষে যখন খালি পকেট থাকবে তখন এমনিতেই কাজে ঝাপিয়ে পড়বেন।
চাকরী করতে হয় জীবনের তাগিদেই অর্থাৎ কাজ করে খেতে হবে সেই জন্যই চাকরী, সেই হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এর চেয়ে অনেক বেশি সিকিউর হচ্ছে চাকরী। মাস শেষ হলেই পাচ্ছেন বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা তাই নিশ্চিন্তেই থাকতে পারেন সব সময়। আর যদি আপনি চাকরী হারান তাহলেও আপনি আগে থেকে নোটিস পাচ্ছেন যেন নতুন চাকরী খুজে পেতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে অনেকটাই অনিশ্চয়তার জীবন। কোন মাসে খুব আনন্দ আবার কোন মাসে দুর্ভিক্ষ কোন মাসে কাজের অনেক প্রেসার আবার কোন মাসে হয়তো কোন কাজই পেলেন না। সেই হিসেবে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থের জোগান অনেক সময় নাও হতে পারে অর্থাৎ অনিশ্চয়তা থেকেই যায়। আপনার যদি রেগুলার ক্লায়েন্ট থেকেও থাকে তাও অনেক সময় আগাম নোটিস ছাড়াও চলে যেতে পারে।
তবে খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই। যারা ফিক্সড স্যালারির চাকরী করে তাদের সব কিছু শুধু ঐ কোম্পানীর উপরেই নির্ভর করে এবং চাকরী চলে গেলে অনেক খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর ফিল্যান্সার হিসেবে আপনার অনেক জন ক্লায়েন্ট তৈরি হয়ে যাবে ফলে একজন চলে গেলেও অন্যদের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারবেন। সব ক্লায়েন্ট এক সাথে চলে যাবে এমন কখনই হবে না যদি না আপনার কাজের চাহিদা চলে যায়। সেক্ষেত্রে চাকরীরও এই সমস্যা হতে পারে। এছাড়া অনেক দিন ফ্রিল্যান্সিং করার পর চাইলে নিজেই অফিস নিয়ে উদ্দ্যেক্তা হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন। অন্যদিকে যারা চাকরী করে তারা সাড়া জীবন চাকরীই করে যায় অধিকাংশ সময়ে।
সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং এর তুলনায় চাকরী অনেক বেশি স্ট্যাবল এবং প্রত্যেক মাসেই নির্দিষ্ট আয় হিসেবে ধরা যায়। যদি আপনি অনিশ্চিয়তায় ভুগতে না চান আগামী মাসে কিভাবে ভাড়া দিবেন কিংবা মাস শেষে নির্দিষ্ট খরচ লাগবেই তাহলে চাকরী হতে পারে আপনার জন্য ভাল। অপর পক্ষে ফ্রিল্যান্সিং এ শুরুর দিকে ভাল যাবে খারাপ যাবে স্বাভাবিক। আপনাকে অবশ্যই সেই রকমের সহ্য ক্ষমতা তখন থাকতে হবে যাতে ভেংগে না পড়েন। তবে সব সময়ই বেশ কয়েকটি আয়ের মাধ্যম থাকা ভাল।
আপনি যখন কোন কোম্পানীতে চাকরী করবেন তখন সেই কোম্পানীতে রেডিমেড অনেক জন একই মাইন্ডের মানুষও পেয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন একসাথে কাজ করার ফলে অনেকের সাথেই বন্ধুত্ব হয়ে যাবে এবং জ্ঞান শেয়ারিং হবে প্রতিনিয়ত। কোম্পানী অনেক সময়ই বিভিন্ন ইভেন্ট , ট্যুর, ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা করে থাকে। এছাড়া আমাদের দেশে চাকরীজীবীদের আলাদা একটি সম্মান সব সময়ই রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সব সময় একাই লড়ে যেতে হবে। বেশিরভাগ সময়ই আপনার কাটবে ঘরে কিংবা শেয়ারড অফিসে। আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টের কাজ করেন সব সময় তাও দূর থেকে কাজ করার ফলে বন্ডিং টা কখনোই সেভাবে শক্ত হবে না অধিকাংশ সময়ে। যদিও আপনার মত অনেক ফ্রিল্যান্সারের বিভিন্ন কমিউনিটি রয়েছে সেখানে গিয়ে মাঝে মাঝে আড্ডা দিতে পারেন তবে দিন শেষে একা একাই কাজ করতে হবে।
আপনি যদি সব সময়ই বন্ধু বান্ধব নিয়ে চলা ফেরা করতে পছন্দ করেন এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পছন্দ করে থাকেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে দুইবার চিন্তা করতে বলবো। আর যদি আপনি চাপা স্বাভাবের হয়ে থাকেন মানে ইন্ট্রোভার্ট হয়ে থাকেন, একা একা কাজ করতে পছন্দ করেন তাহলে গান শুনতে শুনতে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ।
পুরো টপিকটি চলুন এক নজরে তুলনা করে ফেলি
এটা অনেকটা ক্যারিয়ার গাইডলাইন বলতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং হোক কিংবা চাকরী হোক দুইটাই কেউ কারো চেয়ে কম নয়। আপনি এই পয়েন্টগুলো পড়ে আপনার যেদিকে পাল্লা ভারী হয় সেদিক ফোকাসড হয়ে ক্যারিয়ারে নেমে পড়ুন।
এগুলো সবই গাইডলাইন মাত্র। পড়ে অনেক কঠিন মনে হতে পারে তবে আসলে এত বেশি চিন্তার কিছু নেই। মানুষই পথ তৈরি করে, পথ মানুষকে তৈরি করে না। মোদ্দাকথা আপনি যদি এক্সট্রোবার্ট হয়ে থাকেন এবং লোকালি অনেক নেটওয়ার্কিং থাকে তাহলে চাকরী হতে পারে প্রথম পছন্দের। আপনি যদি ইন্ট্রোভার্ট হয়ে থাকেন এবং প্রযুক্তির প্রতি আপনার অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই জ্ঞান থাকে তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
(নিজের অভিজ্ঞতা, টিউটপ্লাস ব্লগ, বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারের মন্তব্য থেকে আইডিয়া নেয়া)
Md.Abdur Rahim
19 অক্টোবর, 2017 at01:21:24 অপরাহ্ন,
Nice post
হাসান যোবায়ের
19 অক্টোবর, 2017 at01:27:03 অপরাহ্ন,
Thanks.
Anupam Samodder
19 অক্টোবর, 2017 at10:24:08 অপরাহ্ন,
I think this article may reduce some tension for those people who are in great indecision right now. Thanks a lot for sharing this kind of reality.
হাসান যোবায়ের
20 অক্টোবর, 2017 at12:33:56 পূর্বাহ্ন,
Thanks Mr Anupam Samodder. I know you are very clear in your vision. 😀