সৃজনশীল লোগো ডিজাইনের ৭ টি টিপস
Published on:

একটি সুন্দর লোগো অতি সহজেই সবার দৃষ্টি কাড়ার ক্ষমতা রাখে। আর এই কারণেই নামিদামি সব ব্র্যান্ড তাদের লোগো ডিজাইনের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতা ও গুরুত্ব প্রদান করে। কারণ এই লোগোর মাধ্যমেই ব্র্যান্ড তাদের পণ্যের প্রচার অ প্রসারণের সকল তথ্য গ্রাহকদের কাছে দিয়ে থাকে। যেকারণে এসব লোগো ডিজাইনের দায়িত্বও পায় সৃজনশীল ও প্রফেশনাল লেভেলের গ্রাফিক ডিজাইনাররা। এভাবে সুন্দর এবং অসাধারণ লোগো ডিজাইন করে নিজের প্রফেশনকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।
তাই একটা লোগো শুধু কিছু শেইপ, কালার, ডিজাইন বা ফন্টের সমন্বয় নয়। বরং এটি একটি কোম্পানিকে ইউনিক ব্র্যান্ডের মর্যাদা দেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আজ সৃজনশীল লোগো ডিজাইনের ৭ টি টিপস নিয়ে আলোচনা করবো। যে বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করা হবে সেগুলো হচ্ছেঃ
- ব্র্যান্ডকে জানুন
- টার্গেট কাস্টমার কে সেটা জানুন
- ডিজাইনের ভেতর সাবলীল ভাব রাখুন
- লোগোর মধ্যে ডায়নামিক ভাব রাখুন
- বৈচিত্র্যময়তা
- কালার এবং ফন্ট ব্যবহারে কুশলী হন
- ডিজাইন অবশ্যই হতে হবে ইউনিক
১। ব্র্যান্ডকে জানুনঃ
কোনো লোগো ডিজাইনে হাত দেয়ার আগে অবশ্যই সেই লোগোর ব্র্যান্ড সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন, ব্র্যান্ডের পণ্যগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিন। যদি কখনো মনে হয় ক্লায়েন্টের দেয়া ডিজাইন ব্রিফ আপনার কাছে অস্পষ্ট মনে হচ্ছে তবে তাকে সাথে প্রশ্ন করুন। তারপরেও যদি আপনার কাছে এসব রিসোর্স আপনার চাওয়ার তুলনায় যথেষ্ট মনে না হয় তবে সেই পণ্যের বিজনেস এবং যাবতীয় সকল কিছু নিয়ে রিসার্চ করুন। এছাড়াও পণ্যের অতীত বাজার এবং যাবতীয় সকল তথ্য জেনে নিন।
২। টার্গেট কাস্টমার কে সেটা জানুনঃ
যেকোনো ব্র্যান্ডের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে তার গ্রাহকগণ। তাই একজন কুশলী লোগো ডিজাইনার গ্রাহকদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সেই লোগো ডিজাইনের গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করেন। টার্গেট কাস্টমারের বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন, রিসার্চ করেন। সেই পণ্য থেকে ঐ গ্রাহকদের কি চাওয়া-পাওয়া অথবা বর্তমানকালের সার্ভিসসমূহ তাদের মনঃপুত হচ্ছে কিনা সেটা জানার চেষ্টা করেন। এভাবে পণ্যের টার্গেট কাস্টমার কে সেটা জানতে পারলে কোনো ব্র্যান্ডের লোগো ডিজাইনের পর নিজের ভেতর যেমন একপ্রকার আত্মতৃপ্তি আসে তেমনি সেই লোগোটিও ক্লায়েন্টের চাওয়াপাওয়ার সাথে মিলে যায়।
৩। ডিজাইনের ভেতর সাবলীল ভাব রাখুনঃ
কিছু শেইপ আর ডিজাইনের সমন্বয়ে একটা লোগো পূর্ণতা পায়। আর একটি সুন্দর লোগো পুরো একটি ব্র্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাই ডিজাইন করার ক্ষেত্রে লোগোর মূল সারাংশটি হতে হবে খুব সাধারণ ও সাবলীল।অন্যভাবে বিবেচনা করলে একটা লোগোর ডিজাইন একজন ডিজাইনারের ডিজাইন সম্পর্কে সূক্ষ্মদৃষ্টি, দৃষ্টিভঙ্গি ও দক্ষতা প্রকাশ করে। ডিজাইনের পূর্বে লোগোর ব্র্যান্ডের ক্যাপশন ও ট্যাগলাইন বিবেচনা করা উচিত না। এতে করে আপনার চিন্তাভাবনা করার পরিসর আরও বেড়ে যাবে। সময়ের সাথে সাথে আপনার লোগোর আবেদনও মানুষের মন থেকে হারিয়ে যাবে না।
৪। লোগোর মধ্যে ডায়নামিক ভাব রাখুনঃ
ডায়নামিক ওয়েবসাইটের এই যুগে কোনোকিছুই স্থির না। তাই লোগো ডিজাইনের ক্ষেত্রেও ডায়নামিক ভাব রাখা উচিত। তবে তার মানে এই না যে যখন তখন লোগোর ডিজাইন পরিবর্তন করতে হবে। তবে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে এবং দৃষ্টিকোণে এই লোগোটি যাতে মানানসই হতে পারে সেদিকটায় নজর রাখতে হবে। আর এভাবেই একটি লোগো বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতে সহজেই গ্রাহকের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হবে। বিভিন্ন বিখ্যাত কোম্পানি মূলতঃ এই দিকটির দিকে খেয়াল রেখেই তাদের লোগোর সিলেকশনের ব্যাপারটি সম্পন্ন করে।
৫। বৈচিত্র্যময়তাঃ
লোগোর ডিজাইনে বৈচিত্র্যময়তা রাখা উচিত। যাতে করে আপনার ডিজাইন করা লোগোটি বিজনেস কার্ড, ব্রশিউর, ফ্লায়ার, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার কিংবা বিলবোর্ডে একইরকম চাকচিক্য বজায় রাখতে পারে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু লোগো শুধু ব্রশিউর বা পোস্টারে দেখতেই ভালো লাগে। কিন্তু একই লোগো যখন বড় কোনো মাধ্যম যেমন বিলবোর্ডে দেখা যায় – তখন খুব একটা মানানসই লাগে না। তাই একটি লোগো যাতে সব মাধ্যমেই সমানভাবে দর্শক, গ্রাহক কিংবা ক্লায়েন্টকে আকর্ষণ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য কোনো লোগো ডিজাইনের পূর্বেই এই বিষয়টি মাথায় রেখে লোগো ডিজাইনের ড্র্যাফটের কাজে হাত দেয়া উচিত।
মনে রাখতে হবে কালার যেকোনো লোগোর সৌন্দর্যকে অনেকগুন বাড়িয়ে তুলে। কিন্তু এমন রং বাছাই করা উচিত হবেনা যা আপনার লোগোর ব্যাসিক স্ট্রাকচারকে বিকৃত করে ফেলে। আর এজন্যই কোনো লোগোর কালার স্কিম কিংবা কালার বাছাই করার আগে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করে নেয়া উচিত।
৬। কালার এবং ফন্ট ব্যবহারে কুশলী হনঃ
আগেই বলেছি লোগোর কালার স্কিম বাছাই করতে অনেক কুশলী হতে হবে। রঙের পাশাপাশি টাইপফেসও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ টাইপফেস এবং রং এই দুটোই লোগোর ভেতর একটা আলাদা আবেদন সৃষ্টি করে। যেমন আপনি কোনো লোগোর মধ্যে লাল রং খুঁজে পেলে তাতে একাগ্রতা, ভালোবাসা, আগ্রাসন কিংবা শক্তি খুঁজে পান। ঠিক একইভাবে অন্য রঙগুলোও একেকটা একেকরকম ভাব প্রকাশ করতে সাহায্য করে। তাই কোনো পণ্যের ধরণ বুঝে তার লোগোর ডিজাইনে রঙের স্কিম বাছাই করতে হবে। লোগোর মধ্যে থাকা রঙের এই অনুভূতিগুলোই একসময় গ্রাহকের কাছে ঐ নির্দিষ্ট পণ্য সম্পর্কে তুলে ধরবে। কালার স্কিম বাছাই করতে ক্লায়েন্ট কিংবা পণ্যের ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করা যেতে পারে। এতে করে সঠিক ও সুনির্দিষ্ট কালার স্কিমটি খুঁজে পেতে আর কষ্ট করতে হয় না।
৭। ডিজাইন অবশ্যই হতে হবে ইউনিকঃ
ডিজাইনের ভেতর মৌলিকত্ব থাকা খুব জরুরি। এটা অন্যান্য পণ্য থেকে আপনার ক্লায়েন্টের প্রতিষ্ঠানকে আলাদা করতে সহায়তা করবে। অপরদিকে একটি ইউনিক লোগোর মাধ্যমেই ডিজাইনার তার সকল সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারেন। আর একটা ইউনিক লোগো তৈরি করার মাধ্যমে একজন ডিজাইনার একটা ভালো সার্কেল তৈরি করতে পারেন। এটা তাকে ব্যক্তিগতভাবে কিংবা প্রফেশনালি পরিচিতি দানে সহায়তা করে।
একটি সুন্দর ও ইউনিক লোগো তৈরি করতে একজন ডিজাইনারকে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। ক্লায়েন্টের চাহিদা, নিজের সৃজনশীলতা, ব্র্যান্ড সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা প্রভৃতি ভালোভাবে রপ্ত করতে পারলেই একটা ভালোমানের লোগো ডিজাইন করা সম্ভব।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.designhill.com/design-blog/logo-design-tips-create-timeless-logo/
Author

Jubair Hasan
Joined 2 years ago
📬 Let's keep in touch
Join our mailing list for the latest updates
Something went wrong!
Please try again.