কিভাবে অন্যের আইডিয়া কপি করে ডিজাইন করবেন!

Published on:

কিভাবে অন্যের আইডিয়া কপি করে ডিজাইন করবেন!

প্রতিদিন সারা দুনিয়ায় কত হাজার হাজার ডিজাইন তৈরি হচ্ছে। প্রায় সব ডিজাইনেই একটা আলাদা আলাদা ভাব খুব সুস্পষ্ট! কোনো ডিজাইনের সাথে অন্য কোনো ডিজাইনের তেমন একটা সাদৃশ্যতা পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু, খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অনেক ডিজাইন আছে যেখানে অন্য কোনো ডিজাইনের সাদৃশ্যতা পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে এটাকে সোজা বাংলা ভাষায় চুরিও বলে থাকে অনেক সময়! কিন্তু একটা ব্যাপার জানলে খুব অবাক হবেন যে, এই ডিজাইন বা সৃজনশীল কাজ চুরির ইতিহাস খুব প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। অনেক বিখ্যাত ডিজাইনার বা চিত্রশিল্পীরাও খুব সূক্ষ্মতার সাথে অন্য কারো ডিজাইন চুরি করে বা সেই ডিজাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করেছেন।

বিখ্যাত লেখক মার্ক টোয়েন তো বলেই গেছেন,

“All ideas are second hand!”

আসলে তাত্ত্বিকভাবে, আপনি যদি কারো ডিজাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কোনো ডিজাইন করে থাকেন তবে সেখানে নিশ্চয়ই আপনার চিন্তাচেতনার অনেক বিষয়ই থাকবে যা আপনার ডিজাইনকে আপনার অনুপ্রাণিত হওয়া ডিজাইনটি থেকে পৃথক করতে সাহায্য করবে। আর আপনার করা এই ডিজাইনটি অন্য এক মাত্রা পাওয়া ডিজাইনে পরিণত হবে যেটা থেকে হয়তো অন্য কেউ অনুপ্রাণিত হতে পারে। ডিজাইন থেকে অনুপ্রেরণা পাওয়ার এই ব্যাপারটি যে শুধু ডিজাইনের বেলায়ই প্রযোজ্য তা কিন্তু না! এটি সৃজনশীল যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য!

অনুপ্রাণিত বা নকল করে ডিজাইন করার ব্যাপারটি শুধু প্রয়োজনীয়ই না বরং এটি অনেক প্রচলিতও বটে! আপনি যদি আরেকজনের ডিজাইন থেকে নকল করে সেখানে নিজের কল্পনাশক্তি বা সৃজনশীলতার কোনো ছাপই না রাখলেন তবে সেখানে আপনার কোনো কৃতিত্ব নেই! এখানে একটি বিষয় খুব লক্ষণীয় যে, আপনি আপনার কাজের কতটা দক্ষতা দিয়ে সেই অনুপ্রাণিত হওয়া কাজটিকে অতিক্রম করছেন। আর এই অতিক্রম করার মাধ্যমেই আপনি সবার মাঝে সমাদৃত হতে সক্ষম হবেন!

১। প্রথমে খুঁজে বের করুন কাকে বা কাদের আপনি অনুসরণ করবেন

ডিজাইন অনুযায়ী এই বিষয়টি বাছাই করা উচিত। লেখকদের সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়। যেমনঃ তার পছন্দের লেখক কে বা তার কাজের মধ্যে সেই লেখকের কতোটুকু বা কিরকম প্রভাব আছে। ঠিক এই প্রশ্নগুলো কোনো মিউজিসিয়ান, আর্টিস্ট বা ডিজাইনারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য!

একজন ডিজাইনার হিসেবে কেউ যদি আপনাকে এই প্রশ্ন করে বসে আর আপনি কোনো নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেন তবে এখনি খুঁজে বের করুন কার কাজ আপনাকে সবচেয়ে বেশি টানে। অথবা কার ডিজাইন থেকে আপনি নতুন নতুন ডিজাইন করতে অনুপ্রাণিত হন! ইন্টারনেটের এই যুগে এই বিষয়গুলো খুঁজে বের করা খুব বেশি কঠিন কাজ না! নোট করুন আর খুঁজে বের করুন তার ব্যতিক্রমধর্মী কাজগুলো ও কোন ডিজাইনগুলো ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে!

design

 

২। অতিক্রম করুন আপনার অনুসরণ করা ডিজাইনকে

অনুকরণ করার মানে এই না যে সেটার ১০০ শতাংশই করতে হবে। আপনি আপনার পছন্দের ডিজাইনারের ডিজাইন থেকে বিভিন্ন প্যাটার্ন বা কালার বা ফন্টের আইডিয়া নিতে পারেন। এটা বিষয়বস্তুও হতে পারে। কিন্তু ডিজাইন এমন হওয়া উচিত নয় যাতে অডিয়েন্স আপনার ডিজাইন দেখে অন্য কোনো ডিজাইনের ধারণা করতে পারে কিংবা সেটার সাথে মিলিয়ে ফেলতে পারে। এতে করে আপনার পেশাদারিত্বের উপরেও একটা খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু আপনি আপনার কল্পনাশক্তির সাথে সেই অনুকরণীয় ডিজাইনের সাথে একটা ভালো মিশ্রণ ঘটাতে পারেন তবে সেখানেই আপনার সফলতা! আর সেই ডিজাইনটিকে ছাপিয়ে যেতে পারলে তো কথাই নেই! আসলে পৃথিবীর অনেক নামকরা ডিজাইনের প্রাথমিক ধাপ এই অন্য কোনো ডিজাইনের অনুপ্রেরণা থেকেই শুরু হয়েছিলো। আর দক্ষ ও বিখ্যাত ডিজাইনাররা তাদের নিজের কাজের প্রতি অবিচল আস্থা রেখেই কোনো ডিজাইনের বিভিন্ন বিষয় অনুসরণ করে এসেছেন।

design

 

৩। মূল বিষয়টিকে ফুটিয়ে তুলুন যা আপনার ডিজাইনকে করবে অনন্যঃ

আপনি নিশ্চয়ই অন্য কোনো ডিজাইনের সকল ফন্ট, কালার কিংবা প্যাটার্ন অনুসরণ করে নিজেরটা তৈরি করবেন না! এক্ষেত্রে আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনার অনুকরণ করা ডিজাইনের কোন অংশটি সেটাকে অনন্য করে তুলেছে। এভাবে আপনার ডিজাইনের জন্যও কিছু অসাধারণ প্যাটার্ন বা ডিজাইন খুঁজে বের করুন যা আপনার ডিজাইনকে অনন্য করে তুলবে। আর এই অনন্য বস্তুটিই আপনার ডিজাইনের মূল উপাদান। পরবর্তীকালে এই মূল উপাদানটিই মহামূল্যবান হয়ে আপনার ডিজাইনে ফুটে উঠবে যা অডিয়েন্সের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে!

বিভিন্ন ফন্ট, কালার, আইকন ও মডিউলের মিশ্রণেই এই ডিজাইন পরিপূর্ণতা পায়। আর তাই এই প্রত্যেকটি উপাদানকেই সমান গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। কোনো একটি অংশের অপূর্ণতা সম্পূর্ণ ডিজাইনের উপর পড়তে পারে। ধরা যাক, আপনার ডিজাইনে ৪ টি কালার আছে। তিনটি কালারের মিশ্রণে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু চতুর্থ কালারের কারণে বাকি তিনটি কালারে খারাপ প্রভাব পড়ছে। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সেই চতুর্থ কালারটিকে বাদ দিয়ে অন্য এমন একটি কালার বাছাই করতে হবে যেটি আপনার ঐ বাকি তিনটি কালারকে সমানভাবে ফুটিয়ে তুলবে। আর এভাবেই প্রত্যেকটা বিষয় পৃথক পৃথকভাবে নিরিক্ষা করে দেখুন। তবেই সব কিছুর পরিপূর্ণ ও উপযুক্ত মিশ্রণ আপনার ডিজাইনকে করে তুলবে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অতুলনীয়।

 

design

 

৪। ফিনিশিং টাচঃ

ডিজাইনের প্রাথমিক সকল ধাপ অতিক্রম করার পর খুঁজে বের করুন আপনার ডিজাইনে কোনো খুঁত আছে কিনা। অনেক সময় ডিজাইনের অনেক বিষয় খুব সহজে ধরা পড়ে না। সেক্ষেত্রে ভিন্ন কাউকে আপনার করা ডিজাইনটি কেমন হয়েছে সেই বিষয়টি জেনে নিন। কোনো সংশোধনের প্রয়োজন হলে সেটাও করে নিন। তবে সেক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।

এভাবে প্রতিটা ধাপ অতিক্রম করে আপনার অনুকরণ করা ডিজাইন আর নিজের ডিজাইনকে পাশাপাশি রেখে নিজেই বিচার করে দেখুন। কতটা সাদৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে কিংবা অন্য কোনো অসঙ্গতি ধরা পড়ছে কিনা! আর এভাবেই আপনার প্রত্যেকটা ধাপের কঠোর পরিশ্রম সফলতায় পর্যবসিত হবে।

design

প্রাথমিক ধাপের ডিজাইনারদের ক্ষেত্রে এই অনুপ্রেরণা নিয়ে ডিজাইন করার বিষয়টি বিশেষ প্রয়োজনীয়। আর এভাবে তারা একসময় স্বয়ংসম্পূর্ণ ডিজাইনার হয়ে উঠবে। হয়তো সেখানে অন্য কোনো বিখ্যাত ডিজাইনারের ডিজাইনের অনুপ্রেরণা থাকবে। কিন্তু সেই ডিজাইনারের কল্পনা ও সৃজনশীলতার কাছে সেটা একেবারেই নস্যির মতো দেখা যাবে!

 

পরিশেষে স্টিভ জবসের একটি বিখ্যাত উক্তিঃ

প্রযুক্তি টিম

 

তথ্যসূত্রঃ

https://onextrapixel.com

Categories:
Share:
Other Blog
Related Posts

Author

Jubair Hasan

Joined 2 years ago

📬 Let's keep in touch

Join our mailing list for the latest updates

Resend verification link

Something went wrong!
Please try again.

Please enter your name.

Please enter a valid email address.