ওয়েব ডিজাইনের জন্য টেক্সচার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সাধারণত ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ হিসেবে টেক্সচার ব্যবহৃত হয়। অনলাইনে কাজের প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য প্রচুর টেক্সচার পাওয়া যায়। কিন্তু অনেকাংশেই সেগুলো কাস্টোমাইজ করা একটি অত্যন্ত ঝামেলাপূর্ণ কাজ হয়ে দাঁড়ায়। ব্যক্তিগত কোনো নির্দিষ্ট প্রজেক্টে ব্যবহারের জন্য ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত সতর্কতার সাথে টেক্সচার বাছাই করতে হয়।
ওয়েব ডিজাইনে অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করে টেক্সচার ব্যবহার করা যায়। তবে কিছু সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব সহজেই আধুনিক ঘরানার ব্যাকগ্রাউন্ড বাছাই করা সম্ভব।
আজ আমি ২০১৮ সালের কিছু জনপ্রিয় টেক্সচার টিপস নিয়ে আলোচনা করবো।
১। সহজবোধ্যতাঃ
অনেক সময় কিছু চমৎকার টেক্সচার ব্যাকগ্রাউন্ড অডিয়েন্সের চোখে নাও পড়তে পারে! ব্যাকগ্রাউন্ডে অবশ্যই চোখে পড়ার মতো কিছু উপাদান থাকতে হবে যা অডিয়েন্সের চোখে পড়তে বাধ্য হয়। খুব ছিমছাম ও সহজেই বোঝা যায় এমন ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার ব্যবহারের মাধ্যমে এই কাজটি করা সম্ভব। আগামি অক্টোবরের একটা ইভেন্টের জন্য “Github’s Universe Conference” তাদের ওয়েবসাইটে এরকম একটি চমৎকার ডিজাইন করেছে। এখানে কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে সাদা ডটের খুব সাধারণ ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়া night-sky effect ও গ্র্যাডিয়েন্ট লোগোটাইপ থাকার কারণে এই ওয়েবসাইটে থাকা ইভেন্টের তথ্য খুব সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে। এখানে ব্যাকগ্রাউন্ড এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে ইভেন্টের সাথে সম্পর্কিত তথ্যগুলো খুব সহজে অডিয়েন্সের দৃষ্টিগোচর হয়! এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
২। বড় ও বোল্ডঃ
বড় এবং বোল্ড ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার অথবা প্যাটার্নের ডিজাইন আজকাল খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই ধরণের ডিজাইন যেখানে ফোরগ্রাউন্ডে টেক্সট অথবা ইউজার ইলিমেন্ট বেশি এবং খুব বেশি ইমেজ নেই সেখানে এই ধরণের ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও এই টেক্সচার দিয়ে খুব চমৎকারভাবে ইউজারকে আকৃষ্ট করা সম্ভব। এর মাধ্যমে ইউজারকে পুরো ডিজাইনের উপর সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করানো সম্ভব হয়। তাই এই ধরণের ডিজাইনে দক্ষ হতে হলে অ্যানালাইটিক্যাল ও ইউজারদের অভ্যাস কিংবা পছন্দের জায়গাগুলোতে বেশি মনোযোগী হতে হয়। এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
৩। বিশেষ কিছু ট্রেন্ডঃ
বিশেষ কিছু ট্রেন্ড অবলম্বন করেও প্রাণবন্ত ও চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করা সম্ভব। বিভিন্ন জ্যামিতিক শেইপ ব্যবহার করে Apacio এর ওয়েবসাইটটি এক্ষেত্রে একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে কিছু উজ্জ্বল জ্যামিতিক শেইপ ব্যবহার করার কারণে ইউজারদের এই ওয়েবসাইটে থাকা টেক্সট এবং অন্যান্য call to action এর দিকে মনযোগী করানো সম্ভব হয়েছে। এখানে টেক্সট হিসেবে simple sans serif ব্যবহার করা হয়েছে যা ঐ জ্যামিতিক শেইপগুলোর সাথে খুব ভালোভাবে সামঞ্জস্যতা লাভ করেছে। টেক্সচারের মধ্যে লেয়ারিং থাকার কারণে এই সাইটের সবগুলো ইফেক্ট খুব ভালোভাবে বোঝা সম্ভব। আর এই সাইটে ব্যবহৃত রঙ দুটি ব্যাকগ্রাউন্ডের লেয়ারকে ডার্ক ইলিমেন্ট ও উজ্জ্বল ইলিমেন্টগুলোর মধ্যে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
৪। ছবিঃ
সাধারণত যেসব ইলিমেন্টগুলো একের অধিকবার ডিজাইনে আছে সেগুলো ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচারগুলোতে না থাকাই ভালো। সেরা সেরা ব্যাকগ্রাউন্ডগুলো খেয়াল করলে দেখা যায় সেখানে ব্র্যান্ড বা পণ্যের মূল তথ্য অনুযায়ী ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন করা হয়। এটি ভিজ্যুয়াল সৌন্দর্য ও দর্শককে ডিজাইনে টেনে রাখতে সক্ষম। Oxeva ঠিক এই কাজটিই দুই পদ্ধতি অবলম্বন করে সম্পন্ন করেছে। এই ডিজাইনে ইমেজ কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছে কিন্তু আউটলাইন খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে। অপরদিকে এখানে ফোরগ্রাউন্ডে বোল্ড কালার থাকায় ডিজাইন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
৫। রঙের তারতম্যতাঃ
বিভিন্ন লেটার ও শেইপে বোল্ড টেক্সচার তৈরি করতে একই কালারের মধ্যে বিভিন্ন মিশ্রণ তৈরি করে সুন্দর ডিজাইনের ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি ক্রয়া সম্ভব। রঙের তারতম্যতা করে এমনকি একই ফ্যামিলির কালারের মধ্যে সংমিশ্রণ করে ডিজাইনের গভীরতা ও ভিজ্যুয়াল চাহিদা বাড়ানো যায়। Types of Type এরকম কিছু চমৎকার কালার কম্বিনেশন ব্যবহার করে ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার ডিজাইনের মধ্যে এক অভিনব ট্রেন্ড তৈরি করেছে। এমনকি গ্র্যাডিয়েন্ট বা শ্যাডো তৈরি করার বদলে বিভিন্ন লেটারফর্ম থেকে লাইন নিয়ে এই ডিজাইন করা হয়েছে। এটি খুব সহজেই অডিয়েন্সকে ব্যাকগ্রাউন্ডের কালার ও মূল হেডলাইন বুঝতে সাহায্য করে। এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
৬। গ্র্যাডিয়েন্টঃ
সব ডিজাইনেই গ্র্যাডিয়েন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি দর্শকেও বিভিন্ন ডিজাইনে আকৃষ্ট করতে সাহায্য করে। আর যখন এটি ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচারের সাথে সম্মিলিত হয় তখন এটি আলাদা বা কোনো ছবির সাথে আলাদা লেয়ারে ব্যবহার করা যায়। তাই কোনো টেক্সচার তৈরি করতে গ্র্যাডিয়েন্ট ব্যবহার করা কোনো কঠিনতম কাজ না! WebGradients সাইটটিতে আপনি খুব সহজেই অনেক কম্বিনেশনের গ্র্যাডিয়েন্টের ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার পাবেন। Mobipad এরকম ব্যাকগ্রাউন্ডে গভীরতা ও টেক্সচার তৈরি করতে সূক্ষ্ম গ্র্যাডিয়েন্ট ব্যবহার করে। ফোরগ্রাউন্ডে ইলাস্ট্রেটেড অ্যানিমেশন গ্র্যাডিয়েন্টকে অস্পষ্ট করে তুলে এবং গাঢ় রঙের call to action খুব সহজে দৃষ্টিগোচর হয়। গ্র্যাডিয়েন্ট টেক্সচারে উজ্জ্বল ও গাঢ় স্পেস ইউজারকে পুরো ডিজাইন এক নজরে দেখতে সাহায্য করে। এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
৭। অ্যানিমেট করাঃ
এতক্ষণ আমরা শুধু স্ট্যাটিক ব্যাকগ্রাউন্ডের ইলিমেন্ট নিয়েই আলোচনা করেছি। কিছু ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইনের ডায়নামিক ইলিমেন্ট ব্যবহার করা যাবে না এমন কথা ডিজাইনের কোনো সংবিধানে লেখা নেই! তাই টেক্সচার ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যানিমেট করা যেতেই পারে! তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে এটা ডিজাইনের অন্যান্য ইমেজ বা টেক্সটকে ওভারল্যাপ না করে যাতে সেগুলো বুঝতে কষ্টকর হয়। খুব সূক্ষ্ম কালার প্যালেট (যেমনঃ Latvian Alphabet) এক্ষেত্রে খুব ভালো কাজে দেয়। এই অ্যানিমেশন সাধারণত চলমান ইলিমেন্ট বা কোনো ভিডিওর ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী। অডিয়েন্সের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চলমান বা ডায়নামিক জিনিসের বিকল্প নেই। তবে অবশ্যই এটা যাতে ফোরগ্রাউন্ড ডিজাইনকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এই চমৎকার ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
এভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড টেক্সচার ব্যবহার করে যেকোনো ডিজাইনকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব!
তথ্যসূত্রঃ
https://designshack.net
MD. SAKIRUL ISLAM
27 May, 2023 at11:42:36 AM,
আমি কাজ করবো তো আপনার নাম্বার টা দিন।