প্রফেশনাল বিজনেসকার্ড ডিজাইন করতে চান? জেনে নিন এখনই!
Published on:

পরিচয়ের মূল দর্শন হল অভিব্যক্তি। পরিচয় পর্বে আপনার প্রকাশিত অভিব্যক্তির মধ্য দিয়েই লোকজন আপনার রুচিবোধের ব্যাপারে স্থায়ী ধারণা পাবে। এক্ষেত্রে একটি কোয়ালিটি সম্পন্ন বিজনেজ কার্ড হতে পারে আপনার পুরোধা ব্যক্তিত্ব প্রকাশের বলিষ্ঠ হাতিয়ার। যেটি কিনা যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। হয়তো এটি আপনার স্পিন ক্লাসের স্মার্ট কোন মেয়ের সাথে প্রথম পরিচয়ের পর্বটিকে আরও অসাধারণ করে তুলতে পারে। আপনার বিজনেস, আপনার লক্ষ্য এবং নিজেকে ভালো ভাবে প্রকাশ করার জন্য একটি উপযুক্ত বিজনেস কার্ড বেছে নিতে পারেন। এই কাজটি আপনি করতে পারেন ভাল কিছু বিজনেস কার্ড ডিজাইনিং টিপস অনুসরণ করার মাধ্যমে।
ভাল একটি কনসেপ্ট নির্বাচন করুন
আপনার বিজনেস কার্ড ডিজাইনের ভিতরে ব্র্যান্ড ভ্যালু ফুটিয়ে তুলুন। এই কাজটি করার জন্য আপনি কিভাবে কাস্টমারকে ইমপ্রেস করা যায় সেটি নিয়ে ভাবুন এবং কোন জিনিসটি আপনার বিজনেসের গল্পটিকে কাস্টমারের নিকট ভাল ভাবে প্রকাশ করার জন্য সহায়ক হবে সেটিও বিবেচনায় নিয়ে আসুন। আপনার ছবি (যদি ব্যবহার করেন), কালার, টেক্সচারসব কিছুই আপনার মার্কেটিং মেটেরিয়ালের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিৎ, এবং এই সব কিছুই আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালুর সাথে মানানসই হতে হবে যাতে করে এই প্রতিযোগিতার বাজারে আপনার বিজনেসকে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করে তুলতে সাহায্য করে।
যদি আপনার কোম্পানিকে ঘিরেই আপনার সমস্ত বিজনেস হয়ে থাকে তো আপনার কার্ডটিও তেমনি হওয়া উচিৎ; ক্ল্যাসিক ডিজাইনকেই ভিত্তি হিসাবে ধরুন, সেই সাথে ছিমছাম সৌন্দর্য এবং মার্জিত ফন্ট আর রঙের ব্যবহার করুন। আর যদি আপনার ব্র্যান্ডটি হয় আরও সৃষ্টিশীল, শিল্পীসুলভ অথবা কৌতূহলপূর্ণ তাহলে আপনার হাতে স্বাধীনতা থাকবে বোল্ড ছবি ব্যবহার করার, সেই সঙ্গে চমকপ্রদ রং, আকর্ষণীয় আকার অথবা প্রতিভা ব্যবহার করে আপনার বিজনেস সম্পর্কে ইতিবাচক মেসেজ দিতে পারবেন।
উপযুক্ত স্পেসিফিকেশন ঠিক করে নিন
আপনি যদি প্রজেক্টের প্রাথমিক প্যারামিটার গুলোর বিষয়ে ধারণা না রাখেন তাহলে কাজটি ভাল ভাবে শুরু করতে করতে পারবেন না। তাই প্রথমেই বিষয়গুলি ঠিক করে নিন। অন্তত যে বিষয়গুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ সেগুলি আপনার বাজেটের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ:
আকার
সবচেয়ে বেশি যে বিজনেস কার্ডটি ব্যবহার করা হয় তার আকার হল ৮৫ মিমি বাই ৫৫ মিমি, অথবা ৩.৫ ইঞ্চি বাই ২ ইঞ্চি। আপনি চাইলে এর চেয়ে বড়ও বানাতে পারেন। কিন্তু যদি এই কাজটি করেন তাহলে কার্ডটি সংরক্ষণ করতে মুশকিল হয়ে যাবে। তুলনা মূলক ছোট করে তৈরি করলেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। শুধু কার্ডের সাধারণ মান বজায় থাকলেই হল।
যে কোন অপ্রচলিত আকৃতির কার্ড আপনার খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে।
ওরিয়েন্টেশন
জিনিসটি মূলত কোন ভাবে মানুষ আপনার কার্ডটি দেখবে সেই বিষয়টিকে বুঝায়।
ল্যান্ডস্কেপ বা অনুভূমিক
এখন পর্যন্ত ল্যান্ডস্কেপ ফরম্যাটেই হল সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ওরিয়েন্টেশন। এটি সহজে পারে যায়, কার্ড হোল্ডারের ভিতরেও চমৎকার মানিয়ে যায় এবং যে কোন প্রিন্টারে প্রিন্ট করা যায়। যাইহোক, এটি খুবই কমন, এবং অন্যান্য কার্ডের মতোই খুব বেশি স্বতন্ত্র নয়।
পোট্রেইট
এটি একটি পরিচ্ছন্ন ও মার্জিত আকৃতি, বর্তমান বছর গুলিতে এর ব্যবহার বেশ ভালোই বৃদ্ধি পেয়েছে (এখনও বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে)। এটি যে কোন প্রিন্টারেই প্রিন্ট যোগ্য। কিন্তু অন্যদিকে, এটি কার্ড হোল্ডারে রাখার পর কার্ডের বিষয়াবলি পড়াটা কঠিন হয়ে যায়।
স্কয়ার এবং কাস্টম কাট
ব্যতিক্রম আকৃতির স্বতন্ত্র বিজনেস কার্ড ব্র্যান্ডিং করার ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজে দেয়। হার্বের জন্য তৈরি রোজের” বিজনেস কার্ড
প্রফেশনাল লুকিংয়ের জন্য কাস্টম কাট এখনও অনন্য। ফিশিংআর্টজের তৈরি বিজনেস কার্ড।
এই ধরণটা স্বতন্ত্র, কিন্তু একই সাথে ব্যয়বহুল। এটি হতে পারে আপনার বিজনেসের জন্য কৌশলপূর্ণ পদক্ষেপ। যখন এর কোন একটি আপনার বিজনেসের জন্য উপযুক্ত হবে, যদিও, এটি বেশ পাওয়ারফুল চয়েজ।
মেটেরিয়াল বা উপাদান
বেশিরভাগ কার্ডই পেপারের তৈরি, যদিও পেপার ছাড়াও আরও অনেক উপায়ে তৈরি করা যায়, যেমন, প্লাস্টিক, কাঠ থেকে ধাতু পর্যন্ত এর থেকে বাদ যায় না এর মাঝে আছে স্টিলও। ধরে নিচ্ছি আপনি পেপার দিয়েই তৈরি করবেন, তখন আপনাকে এর পুরুত্ব, প্রলেপ বা আবরণ এবং রঙ নির্বাচন করতে হবে। এই সব কিছুই প্রাইসের উপরে প্রভাব ফেলবে।
আপনার বিজনেস কার্ড ডিজাইনের ভিত্তি বাছাই করুন
এখন আমরা মজার অংশে প্রবেশ করব! একবার যখন আপনি নিচের বিষয় গুলো বিবেচনায় নিয়ে আসবেন, তখন আপনার বিজনেস কার্ডের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত উপাদান গুলি গুরুত্ব পাবে।
কালার বা রঙ
আপনার ব্র্যান্ডকে ভাল ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ভাল ভাবে বিভিন্ন রঙের সমন্বয় করতে হবে।
ফুল কালার বনাম ১ বা ২ রঙের প্রিন্টিং
স্বল্প বাজেটে বড় অর্ডারের জন্য, আপনি CMYK ( CMYK বলতে চার রংয়ের সম্মিলিত প্রিন্টিংকে বুঝায়: cyan, magenta, yellow, এবং প্রধান রং black. মূলত এই চার প্রকার রঙ দিয়েই অন্য সব রঙ করা হয়) ফুল কালার করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। শুধু ১ বা দুই রঙ দিয়ে কম টাকায় প্রিন্ট করতে পারবেন – যদিও এই পদ্ধতিটি তখনই কাজে আসবে যখন আপনি ৫০০ পিসের বেশি অর্ডার করবেন। যেদিন থেকে বিজনেস কার্ড ডিজিটাল ভাবে প্রিন্ট করা শুরু হয়, তার পর থেকে মাল্টিপল কালার আর আগের মতো ব্যয়বহুল নয়।
ফন্ট
আপনার লোগো এবং কোম্পানির নামের জন্য সুন্দর দেখে ফন্ট নির্বাচন করুন। অবশ্যই সেটি যেন সহজেই পড়া যায় এমন সেন্স সেরিফ ফন্টে হয়। Ludibes এর তৈরি।
আপনার কার্ডটির ফন্ট স্টাইল সঠিক করার জন্য নিচের বিষয়গুলি খেয়াল রাখতে পারেন:
- আপনার কার্ডের যে কোন ফন্ট যেন ৮ এর কম না হয় সেদিকে লক্ষ রাখবেন। অন্যথায় সেগুলি পড়তে অসুবিধা হবে।
- সেরিফ ফন্ট আপনার কার্ডে ক্ল্যাসিক ফিল এনে দিবে আর সেন্স সেরিফ ফন্টে রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। আধুনিকতার।
- ডিজাইনার সহ আপনাকে ফন্ট লাইসেন্সের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে। কিছু ফন্ট ব্যবহার করা যায় সম্পূর্ণ ফ্রিতে। আবার কিছু আছে কেনার পরেও সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে ব্যবহার করা যায়। তাই শুরুতেই ফন্ট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে নিন।
সঠিক স্থানে সঠিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করুন
বেশিরভাগ লোকই আপনার বিজনেস কার্ডটি গ্রহণ করবে – তারপর আপনার শৈল্পিক ডিজাইনের সাথে পরিচিত হওয়ার পর কার্ডটি রোলোডেস্ক বা কার্ড বক্সে রেখে দেন। এই জন্যই অধিকাংশ ডিজাইনারই মূল জিনিসগুলি কার্ডের সামনে নিয়ে আশার জন্য সুপারিশ করেন। সেভাবেই ব্যবহার করুন আর মজাটা উপভোগ করুন।
ভেঙে ফেলুন চিরাচরিত প্রথা
অনেক বিজনেসের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কার্ড ডিজাইনিং সময় মৌলিক কিছু খুঁজে বের করা। ভাগ্যগুণে, এই কাজ করার জন্য আপনার কাছে অনেকগুলি পথ খোলা আছে যার মাধ্যমে আপনি উপযুক্ত কিছু বানাতে পারেন।
Author

Jubair Hasan
Joined 2 years ago
📬 Let's keep in touch
Join our mailing list for the latest updates
Something went wrong!
Please try again.