করোনা ভাইরাস এখন শুধু বাংলাদেশ-ই নয়; পুরো বিশ্বের জন্যই আতঙ্কের আরেক নাম।ন্যানো স্ক্যালের চেয়েও ক্ষুদ্র এই ভাইরাসের আগ্রাসনে পুরো বিশ্বই আজ দিশেহারা। এই ভাইরাস প্রথম চীনের উহানে আঘাত করলেও ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ, আমেরিকা হয়ে আফ্রিকা- এশিয়াতেও। ফলে বিকল হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বের স্বাস্থ্য ও বাণিজ্য ব্যবস্থা। মানুষ একদিকে যেমনভাবে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে; অন্যদিকে সমানতালে অর্থের অভাবে অনেক কোম্পানী কর্মী ছাটাই করছে ব্যাপকভাবে। এমনকি ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য বিখ্যাত মার্কেটপ্লেসগুলোতেও এখন কাজের পরিমাণ অনেক কমে এসেছে।অন্যদিকে, বিশ্বের সব নামীদামী কোম্পানীগুলোও এখন তাদের মানব সম্পদ পরিচালনার ধরণ পরিবর্তন করে “ওয়ার্ক ফ্রম হোম” পদ্ধতিতে যেতে বাধ্য হয়েছে। এক কথায় বলা যায়, যা কয়েক মাস আগেও ছিল অকল্পনীয়; এখন সেই বিষয়গুলোই চাক্ষুষ দৃষ্টিতে অবলোকন করতে পারছি আমরা। এই কয়েক মাসে বিশ্ব যেরকম পরিবর্তিত হয়েছে, আপনিও নিজেকে কিছুটা পাল্টে নিচ্ছেন তো! তবে আর দেরি কেন? করোনা ভাইরাস এর আগ্রাসনের এই সময়ে স্কিল ডেভেলাপমেন্ট এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে চলুন জেনে নিই এই ব্লগে।
২০২০ এর এই বিশ্ব কিন্ত আর আগের মতো নেই। এখন কোম্পানীগুলো তথ্যদানের খাতিরে শত শত কর্মী রাখার বদলে চ্যাট বটের মাধ্যমে কাস্টোমারদের জিজ্ঞাসাগুলো মিটিয়ে নিচ্ছে। মেশিন লার্নিং- আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো আধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজেই এখন এই ধরণের পুণরাবৃত্তিমূলক কাজগুলোতে মানুষকে খুব সহজেই সরিয়ে দেয়া যাচ্ছে। এর পাশাপাশি অটোমেশন আর রোবোটিক্সের জ্যামিতিক হারে উন্নয়নকে অনেক বিশেষজ্ঞ মানব জাতির অস্তিত্বের জন্যও হুমকি হিসেবে দেখছেন। এই বিষয়গুলোকে আরো ত্বরান্বিত করেছে বর্তমানের এই পরিবর্তিত পরিস্থিত। পূর্বে কোম্পানীগুলো আর্থিক স্বক্ষমতার জোরে এই ধরনের ক্ষেত্রে কম দক্ষ মানুষকে চাকুরিতে রাখলেও, এখন কিন্তু চাকুরি ছাটাই এর ক্ষেত্রে অদক্ষ লোকের বাঁচার কোন উপায় নেই। এসব বিষয় বিবেচনা করে নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে, আপনি যদি বিভিন্ন সফট স্কিল বা হার্ড স্কিলে দক্ষ না হন; তবে অনতিবিলম্বে আপনার উচিৎ স্কিল ডেভেলাপমেন্টে জোর দেয়া।
২) স্কিল ডেভেলাপমেন্টের সার্টিফিকেটের চেয়ে সেই স্কিল সম্পর্কিত বাস্তবধর্মী কোন প্রজেক্টই আপনাকে ভিড় থেকে আলাদা করবেঃ
এখন প্রায়ই দেখা যায়, মানুষজন বিভিন্ন ই-লার্নিং সাইট থেকে বিভিন্ন কোর্স করে সার্টিফিকেট নিচ্ছে এবং সেটি বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে প্রদর্শন করছে ; পাশাপাশি নিজের পোর্টফোলিওতে যোগ করছে। এরপর আবার নতুন আরেকটি বিষয়ের কোর্স করে পূর্বের বিষয়টি পুরোপুরি ভুলেও যাচ্ছে। অনেকে আবার একই বিষয়ের উপর ৪-৫ জায়গা থেকে সার্টিফিকেট নিচ্ছেন। যার ফলে সার্টিফিকেট অর্জন হচ্ছে ঠিকই; কিন্তু তিনি আসলে প্রকৃতপক্ষে দক্ষ হয়ে উঠছেন না। ফলে আগেও তিনি যেই ভিড়ে ছিলেন, এখনও সেই ভিড়েই থেকে গেলেন। এই সমস্যার কারণটি পরিষ্কার হয়ে যাবে এই উদাহরণ থেকে। ধরুন, আপনি এম এস ওয়ার্ডে অনেক ভালো টাইপ করা শিখে পরে কখনো কোন আর্টিক্যাল বা ব্লগ লিখলেন না; আবার আপনি কোন অফিসেও ওয়ার্ডে লেখার কোন কাজ করলেন না- তাহলে আপনার এই টাইপিং এর দক্ষতা কি আপনি খুব বেশিদিন ধরে রাখতে পারবেন? উত্তর আশা করি আপনার কাছেও পরিষ্কার। এজন্যই, আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, যখনই যেই স্কিল শিখবেন তাঁর সংশ্লিষ্ট কিছু প্রজেক্টে কাজ করবেন যাতে এই শেখার বিষয়টি আপনি হৃদয়ে ঠাই দিতে পারেন। ধরুন, আপনি অটোক্যাডের কাজ শিখেছেন। এখন, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একটু ঢুঁ মেরে দেখুন, এই স্কিলের কি কি কাজ সেখানে রয়েছে। এছাড়াও, আপনার পরিচিত কারো কোন বিল্ডিং ডিজাইন বা এই ধর্মী কোন কাজ থাকলে প্রয়োজনে কম অর্থের বিনিময়ে সেই প্রজেক্টটি করে দিন। প্রজেক্টে গিয়ে বাস্তব ক্ষেত্রে আপনি যেই দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন, সত্যি বলতে এর কোন তুলনা হয়না। তখন আপনার আত্ববিশ্বাসই চলে যাবে অনন্য একটি পর্যায়ে এটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
৩)স্কিল ডেভেলাপমেন্ট ছাড়া কোন উদ্যোক্তা/ এন্ট্রেপ্রেনার তাঁর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবেন নাঃ
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে এসে কোন উদ্যোক্তা যদি অবিরাম শেখার স্কিল আয়ত্বে আনতে না পারেন, তবে তিনি খুব শীঘ্রয় ম্রীয়মান হবেন- এটি অনিবার্যই। অবশ্য উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি সব সময়ই সত্য।তবে, এখনকার এই যুগে যেমন কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়ুয়া এক উদ্যোক্তাকে যেমন মেকানিক্যালের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হয়; তেমনি মেকানিক্যালে পড়ুয়া উদ্যোক্তাকে আবার ফার্মেসির বিষয়েও অনেক পড়াশুনা অনেক সময় করতে হয়। আর এই যুগে একটি বিষয় সব উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রেই কমন পড়ে যায়- আইটি। আপনি যদি ওয়েবসাইট, এপ্লিকেশন, সাইবার সিকিউরিটি, ফিনটেক, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, এনিমেশন সহ অত্যাধুনিক বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা না রাখেন তবে আপনার জন্য সফল উদ্যোক্তা হওয়া আসলেই বেশ কঠিনই বটে। কারণ, এগুলোর সমন্বয় ব্যতীত দ্রুত পরিবর্তনশীল এই সময়ে কোন কোম্পানী টিকিয়ে রাখা আসলেই মুশকিল। অন্যান্য সময় বিভিন্ন ঝামেলায় এই স্কিলগুলো আয়ত্বে আনার সুযোগ না থাকলেও-হোম কোয়ারেন্টিনের এই সময়টা কিন্তু খুব সুন্দরভাবেই কাজে লাগিয়ে এই ঘাটতি আপনি পুশিয়ে নিতে পারেন।
আর দেরি না করে, আজই প্ল্যান করে ফেলুন আপনার স্কিল ডেভেলাপমেন্ট ক্যালেন্ডার; আর সময়কে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যান সমসাময়িক সময়ের লোকগুলোর চেয়েও একটু আগে। করোনা ভাইরাস এর আগ্রাসনের এই সময়ে স্কিল ডেভেলাপমেন্ট যে আগের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জরুরী- একথা এখন সর্বজন বিদিত।
সবাইকে শুভকামানা জানিয়ে এই ব্লগ এখানেই শেষ করছি। আপনি ভালো থাকুন, আপনার আশেপাশের মানুষগুলোর খোঁজখবর নিন- তাদেরকেও ভালো রাখুন।
MD Sohan
23 এপ্রিল, 2020 at01:02:47 পূর্বাহ্ন,
ami shaktachi kevaba korbo
MyPieTech
8 আগস্ট, 2020 at09:27:45 অপরাহ্ন,
Thanks for sharing the awesome content.
Onk vlo laglo…
MyPieTech