আপনার যদি শুধুমাত্র প্রিন্ট করা কিংবা হাতে আর্ট করা ড্রয়িং পেপার থাকে আর সেগুলো যদি অনলাইন পোর্টফোলিও তে ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই খুব ভাল ক্যামেরা কিংবা স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করুন। সবচেয়ে ভাল হয় প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুললে। কারণ আপনার পোর্টফোলিও হবে আপনার কাজের বহিঃপ্রকাশ। সেখানে মোবাইল দিয়ে দিয়ে তোলা সাধারণ ছবি আপনার অসাধারণ কাজকে ম্লান করে দিবে।
আপনার এই ছোট বিনিয়োগ একসময় অবশ্যই অনেক বড় আকারে ফিরে আসবে।
আপনার ডিজাইন করা পোস্টার কিংবা লোগো সরাসরি ওয়েবসাইটে না দিয়ে সেটা যদি সুন্দর কোন মকআপ ব্যবহার করে উপস্থাপন করেন তাহলে সেটা আরো বেশি প্রফেশনাল মনে হবে। মকআপ কি কিংবা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা জানতে আমাদের এই টিউটোরিয়ালগুলো দেখতে পারেন।
অনেক প্রিমিয়াম মকআপের পাশাপাশি ফ্রি মকআপ পাওয়া যায়। যেমন দেখতে পারেন এখানে কিংবা এখানে।
বিভিন্ন প্রিমিয়াম পোর্টফোলিও থিম পাওয়া যায় যেগুলো ডিজাইনই করা হয়েছে পোর্টফোলিও এর জন্য। সেগুলো ব্যবহার করে তৈরি করতে পারেন আপনার নিজের পোর্টফোলিও সাইট।
আপনার যদি মনে হয় ওয়েবসাইট চালানো আপনার জন্য অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ কিংবা টেকনিক্যাল তাহলে খুব সহজ সমাধান ফেসবুক পেজ!। হ্যা আপনি শুরুতে একটি ফেসবুক পেজ কিংবা ফ্লিকার ব্যবহার করেই পোর্টফোলিও সাজাতে পারেন। আমাদের দেশে যেহেতু এমনিতেই ফেসবুক অনেক জনপ্রিয় তাই ফেসবুক পেজ দিয়েও পেতে পারেন প্রচুর ক্লায়েন্ট এবং অডিয়েন্স।
তবে অবশ্যই ভবিষ্যতে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করার পরিকল্পনা রাখবেন। কারণ ফেসবুক আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয় হলেও বাইরের দেশের অনেক ক্লায়েন্ট ফেসবুকে প্রফেশনাল কাজ দেখতে পছন্দ করেন না।
অনেক সময় প্রজেক্ট করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। সেই চ্যালেঞ্জ কিভাবে সমাধান করা হয়েছে সেটা এবং ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক সহ ছোট গল্প সহ পোর্টফোলিও সাজাতে পারেন। এতে করে অডিয়েন্সের ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা হতে পারে। আরো বেশি ডায়নামিক একটি পোর্ট ফোলিও হতে পারে।
আপনি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন এবং সেটা সমাধান করেন সেটাও পোর্টফোলিও ডিজাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রকাশ করতে পারেন। যেমনটা করেছেন উপরের পোর্টফোলিও আর্টিস্ট।
ডিজাইনের শুরুটাই হয় স্কেচিং করে। হোক সেটা লোগো ডিজাইন কিংবা ওয়েবসাইট ডিজাইন। আপনি হয়তো ৬-৭টি লোগো ডিজাইন করেছেন কিংবা আইডিয়া দিয়েছেন সেখান থেকে ক্লায়েন্ট একটি বাছাই করেছেন। তাই বলে বাকিগুলো মুছে দিবেন? না। আপনার এই ডিজাইন প্রসেসটাও অনেক সময় ক্লায়েন্টকে ইম্প্রেস করবে। ক্রিয়েটিভ ডিরেকটর দেখতে চায় আপনার ধাপগুলো ঠিকভাবে পালন করছেন কিনা। এছাড়াও অনেক সময় ক্লায়েন্ট মনে করে কাজগুলো খুবই সোজা। অথচ একজন ডিজাইনার কত পরিশ্রম করে ডিজাইন করে এবং কতগুলো ধাপ পার হয়ে ডিজাইন করে সেটা শুধুমাত্র আপনি যদি ধাপগুলো প্রকাশ করেন তাহলেই বুঝানো সম্ভব।
ভিএফক্স আর্টিস্ট কিংবা থ্রিডি মডেলার যখন শোরিল/ডেমোরিল প্রকাশ করে তখন সেখানে মেকিংটাও দেখানো হয়। এটার কারণ ক্লায়েন্টকে কাজের ধাপগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া। যেমন দেখুন এই ভিডিওটা।
সব সময়ই সিম্পল ডিজাইন ব্যবহার করুন। উলটা পালটা রঙ চং, ফ্ল্যাশ অ্যানিমেশন কিংবা হিবিজিবি ওয়েবসাইট ডিজাইন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ ক্লায়েন্ট কিংবা অডিয়েন্স যখন দেখবে আপনার ওয়েবসাইট পরিস্কার নয় তখন ধরেই নিবে আপনার কাজও তেমন ক্লিন নয়। তাই সব সময়ই মিনিমাল ডিজাইনে জোর দিন।
অনেক বাছাই করে পোর্টফোলিও সাইট ডিজাইন করে পাবলিশ করলেন। তারপর কি? কাজ শেষ? না। প্রতি ৬-৭ মাস পর পর রিভিউ করুন। আপনার নতুন কাজগুলো যুক্ত করুন। যেগুলো পুরাতন মনে হচ্ছে মুছে দিন। অনেক সময় ক্লায়েন্ট কিংবা অডিয়েন্সের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিতে পারেন। আপনার পোর্টফোলিও তে সময় দেয়া মানে আপনার কাজের উপর ইনভেস্ট করা। ডিজাইনারদের একটি সাধারণ ব্যাপার হচ্ছে অনেক ক্লায়েন্ট যখন হয়ে যায় তখন পোর্টফোলিও আর আপডেট করে না। এই কাজটি করবেন না। আপনার পোর্টফোলিও আপডেটেড মানে আপনিও আপডেটেড। নাহলে ১০-১৫ বছর পর ব্যাকডেটেড আর্টিস্ট হিসেবে কাজ তেমন পাবেন না!
অনেক খুটে খুটে আপনার ডিজাইন দেখলেন, যত্নের সাথে সেগুলো সিলেক্ট করলেন, ক্রিয়েটিভ পদ্ধতিতে এবং ভিন্নভাবে ইন্টারনেট জগতে প্রকাশ করার জন্য প্রস্তুত হলেন। তারপর কি?
“একজন ক্রিয়েটিভ মানুষের মেরুদন্ড হচ্ছে পোর্টফোলিও। পোর্টফোলিও আপনার রক্ত, ঘাম, মেধা এবং বিজয়কে প্রকাশ করে। এটি আপনার ব্রান্ড যা নিয়ে অনায়াসেই গর্ব করতে পারেন।” – জ্যাকব ক্যাস
(এখানে আমাদের দেশের বিভিন্ন স্টুডিও এবং ডিজাইনারের পোর্টফোলিও শেয়ার করা হয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ডিজাইনারের কাজও শেয়ার করা হয়েছে। ক্যানভা.কম থেকে বিভিন্ন সোর্স এবং ব্লগ অনুসরণ করা হয়েছে)
মন্তব্য করুন
ফেইসবুক দিয়ে মন্তব্য